প্রতিবেদক, Khabor.com.bd ঋণ জালিয়াতির ২৬ মামলার ‘ভুল আসামি’ হয়ে বিনা দোষে কারাভোগকারী জাহালমকে পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক। জাহালমকে সাত দিনের মধ্যে এই ক্ষতিপূরণ দিতে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের নির্দেশের তিন দিনের মধ্যেই ব্যাংকটি এই টাকা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) ব্র্যাক ব্যাংক আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান বৃহস্পতিবার বলেন, ‘আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী জাহালমকে আজ (বৃহস্পতিবার) ৫ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়েছে। বিষয়টি এখন আদালতকে জানানো হবে।’ এর আগে জাহালমকে ১৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে গত ৭ আগস্ট হাইকোর্টের রায় প্রকাশ করা হয়। ওই রায়ে জাহালমের ঘটনার জন্য দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা, সোনালী ব্যাংক ও ব্র্যাক ব্রাংকের সমালোচনা করেন উচ্চ আদালত। রায়ের অনুলিপি পাওয়ার এক মাসের মধ্যে ১৫ লাখ টাকা পরিশোধ করতে বলা হয় ব্র্যাক ব্যাংককে। টাকা পরিশোধ করে এক সপ্তাহ পর রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। পরে ওই রায়ের বিরদ্ধে আপিল আবেদন করে ব্র্যাক ব্যাংক। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার আদালত গত সোমবার এক আদেশে তাকে আপাতত ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বলেন। ক্ষতিপূরণের বাকি ১০ লাখ টাকা বিষয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য আগামী ৩১ অক্টোবর দিন নির্ধারণ করে দেন আদালত। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। ব্র্যাক ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন মো. আসাদুজ্জামান। ঋণ জালিয়াতির একাধিক মামলার আসামি ‘সালেক’ হিসেবে জাহালমকে শনাক্ত করেছিলেন ব্যাংক কর্মকর্তারা। ফলে কোনো অপরাধ না করেও কারাগারে ছিলেন জাহালম। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে একটি জাতীয় দৈনিকে ‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না…’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হলে প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিত দাশগুপ্ত। বিষয়টি আমলে নিয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে দুদক কর্মকর্তা, মামলার বাদীসহ চারজনকে তলব করেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি জাহালমকে কেন মুক্তির নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করে আদালত। ওই রুলের শুনানি নিয়ে ওই বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট জাহালমকে মুক্তির নির্দেশ দেন। জাহালম প্রশ্নে ব্যাংক ঋণ জালিয়াতির ৩৩ মামলার এফআইআর, চার্জশিট, সম্পূরক চার্জশিট এবং সব ব্যাংকের এ সংক্রান্ত নথিপত্র জমা দিতে দুদককে নির্দেশ দেন আদালত। সবকিছু পর্যালোচনা করে শুনানির পর বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় ঘোষণা করেন। এ সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয় ৭ আগস্ট। রায়ে আদালত বলেন, তদন্ত রিপোর্টে দেখা যায় যে বিশেষত ব্যাংকের দুই কর্মকর্তা সালেকের জায়গায় জাহালমকে উপস্থাপন করেন। তারা যেনতেনভাবে একজনকে (জাহালম) দুদকের সামনে হাজির করে তাকে আবু সালেক হিসেবে শনাক্ত করেন। তারা তদন্ত কর্মকর্তাকে ভুলপথে পরিচালিত (মিসগাইড) করেছেন। তারা ইচ্ছা করে এ কাজ করেছেন। মামলার সংশ্লিষ্ট দুদক কর্মকর্তাও অদক্ষ ও অযোগ্য বলে উল্লেখ করেন আদালত।
৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ পেলেন জাহালম
পূর্ববর্তী খবর